সুস্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। বর্তমান যুগে এ কথার সত্যতা মানুষ আরও বেশি করে অনুভব করছে। রোগব্যাধি যেন এখন বেশিরভাগ পরিবারের স্থায়ী সঙ্গী হয়ে গেছে। সময়ের সাথে সাথে অসুখ-বিসুখের সংখ্যাও বাড়ছে।

সুখ শুধুমাত্র অর্থের মধ্যে নয়, সুস্বাস্থ্যের মধ্যেও​


রোগব্যাধির এখন আর নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা নেই। যে কোনো বয়সের মানুষ আজকাল নানা ধরনের অসুস্থতায় ভুগছে।

ডায়াবেটিস, নারীদের বিভিন্ন সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, এসিডিটি— এসব অসুখ এখন প্রতিটি ঘরেই দেখা যায়।

এর মূল কারণ হলো মানুষের অনিয়মিত জীবনযাপন। খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে ঘুমের রুটিন— সব কিছুতেই এসেছে বিশৃঙ্খলা। বেশিরভাগ মানুষের জীবনেই অনিয়মের আধিক্য দেখা যাচ্ছে।

ফাস্ট ফুড খাওয়ার প্রবণতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। কিছু বছর আগেও মানুষের খাদ্যতালিকায় শুধুমাত্র বাড়ির তৈরি খাবারই ছিল এবং সেগুলো ছিল পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর।

বর্তমানে শাকসবজি, ফলমূল, মাছ ও মাংসে ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে। বেশি উৎপাদনের আশায় ব্যবহৃত এই কেমিক্যালগুলো শরীরের পরিপাক ক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে এবং শারীরিক বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করছে।

অন্যদিকে, রেস্টুরেন্টগুলোতে মানুষের ভিড় বাড়ছে, যেখানে মাংস খাওয়ার চাহিদা বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ফলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

যারা পোড়া মাংস খেতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য আরও খারাপ খবর রয়েছে। পোড়া খাবার কিডনি, ফুসফুস, লিভার এবং ত্বকের রোগের জন্য দায়ী।

SSA-র প্রধান গবেষক গাই এম. পপি জানিয়েছেন, পোড়া খাবারে বিপজ্জনক অ্যাক্রিলামাইড নামক উপাদান থাকে, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। তাই খাদ্যের বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক হওয়া জরুরি। কম তেলে রান্না করা, বেশি পরিমাণে শাকসবজি খাওয়া এবং যতটা সম্ভব চিনি এড়িয়ে চলা উচিত।

সুস্থ জীবনধারা​


ছোটবেলায় আমরা সবাই পড়েছি—

"Early to bed, early to rise"

কিন্তু এখন অনেকেই গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকেন এবং খুব ভোরে ঘুমাতে যান। এর পেছনে প্রযুক্তির অপব্যবহার অনেকাংশে দায়ী।

ফেসবুক, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার সুস্থ জীবনযাত্রার প্রধান বাধাগুলোর একটি হয়ে উঠেছে।

এছাড়া, অনলাইন ও অফলাইনে নানা ধরনের ভিডিও গেমের আসক্তিও তরুণ প্রজন্মের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে।

চিকিৎসকদের মতে, ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে ঘর অন্ধকার করে রাখা উচিত। কিন্তু অনেকেই রাতে ঘুমানোর আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের স্ক্রিনের আলোতে চোখ রেখে দেন, যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে, ছেলে-মেয়েরা দিনে ৩-৪ ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহারের কারণে অসুস্থতার দিকে ধাবিত হচ্ছে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভোরে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস মানুষের সফলতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই প্রতিদিনের রুটিনে হাঁটা ও ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।

শহুরে পরিবারগুলোতে এখন গৃহপরিচারিকা থাকায় মানুষ শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে ফেলছে। ফলে নানা ধরনের রোগ বাড়ছে।

এ যেন অসুস্থ হওয়ার প্রতিযোগিতা!

তাই, সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত সময়মতো ঘুমানো ও ভোরে ওঠা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর দিতে হবে, যাতে তা শরীরের ক্ষতি না করে।

শরীর ভালো থাকলে মনও শান্ত থাকবে।

সুস্থতা সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ। তাই নিজে সুস্থ থাকুন, অন্যকেও সুস্থ থাকার পরামর্শ দিন।
 

About us

  • BanglaForums.com একটি বাংলা অনলাইন কমিউনিটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যক্তিরা আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারে, ধারণা ভাগ করে নিতে পারে এবং বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য ও প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে পারে।

Quick Navigation

User Menu